বিলেতি বাঁদর
জন্মে ছিলাম, ভাগ্য আমার, দিশি হুনুমান।
জীবন ধরে সয়েছি এই দীর্ঘ অপমান।
নিজের দেশের ব্যাপার-স্যাপার ভাল্ লাগে না, ভাই।
পাশ্চের নতুন গান-বাজনায় মত্ত হয়েছি তাই।
মাথায় পরেছি টুপি, গলায় বেঁধেছি দড়ি।
নিজেকে আয়নায় দেখে, নিজের প্রেমে যে মরি!
বুট-জুতো পায়, কোট-খানি গায়,
উলঙ্গ ঠ্যাঙে, তাও চলে যায়।
ইস্তিরি শেষ হলে, পরে প্যান্ট-শাট,
ঘর থেকে বেরোবো, সই ফিট-ফাট!
রোজ রোজ খুব করে মেখে হলুদ-আদা,
কালো মুখ হয়ে গেছে বেশ কিছু সাদা!
নিজের ভাষাকে দিনে দিনে ভুলি।
আধুনিক গান গেয়ে, গাছ থেকে ঝুলি।
সিগারেট, মদ আমি প্রায়ই রাখি নিকটে।
লেজটাকে গুটিয়ে, তাই রাখি পকেটে।
মদ-ভেজা লেজে যদি লেগে যায় আগুন,
পুড়ে গিয়ে হতে হবে তেলে-ভাজা বেগুন।
পোড়া মুখে কি আর সুট-টাই চলে?
গোরারা আমাদের ‘মুখ-পোড়া’ বলে।
মেম-দের থেকে আমি পেয়েছি আদর।
হয়ে গেছি, এই দেখো, বিলেতি বাঁদর।
পেছন ঝাকিয়ে নাচি, হুক্ হুক্ ডাকি।
লোকে বলে, অনুপম সবদিকে নাকি।
বৃহস্পতিবার ২ জুলাই, ২০২০ খ্রি,
ব্রুক্লিন, নিউ ইয়র্ক