প্রকৃতির পথ / অস্থায়িত্ব
.
সূর্য-কিরণ এসে ছুঁলো গাছের ডালের কুঁড়ি।
যাগলো ছোঁয়ায় পাপড়ি, পাতা।
হাওয়ার চুমে দোলে।
ঘ্রাণ এসে যায়, বাতাস-দূতে,
প্রেমের শুভ ঘরে।
.
রাতের ঝড়ে সব চ’লে যায়।
কাঁদিস কেনো, ওরে?
.
******
.
পর্বতের চূড়ার থেকে সাগর-তীরে নেমে,
গভীর আঁধারে ডুবে, আলোয় আবার উঠে এসে,
বারে বারে সেই চক্র ঘোরে,
তোমায় আমায় ধ’রে।
.
তারার আগুন-ঝড় বারে-বারে
বিশ্বের ধোঁয়া-ধুলো টেনে এনে, জুড়ে,
নতুন রূপে আবার মহাকাশে ছোড়ে।
তারই থেকে সেই ফোঁটাগুলো,
যার থেকে সব জীব-প্রাণী।
.
তবে কোথা থেকে আসে, বলো,
চেতনার প্রকাশ, খুশি-ব্যথার টানাটানি,
স্বয়ঙ্গের জন্ম, স্বার্থের দাবি,
করুণা-বিবেকের টের?
.
এরই থেকে শ্বাস, পান, খাওয়া,
মৈথুন, খুন-যুদ্ধ-সংহার।
এরই থেকে সব মিলন-ভালোবাসা,
সব কর্ম, ধর্ম, মায়া-দয়া।
.
******
.
যে আলো পর্বত-চূড়ায় ভাসে,
যে আঁধার সাগরের গভীর তলে বয়ে,
যে বাতাস বনের গাছে গায়,
যে হাওয়া ঢেউয়ের ওপর খেলে—
এদেরকে বেঁধে রাখা কি যায়?
.
এদের তো শুধু মন-মহলে
কিছুদিনের বাস। তার পরে বিদায়।
রোদের ছোঁয়ায় যেমন শিশির-ফোটা যায়,
মায়ের ডাকে তেমনই তুমি-আমি যাবো।
.
******
.
নিজের ভাগ্যে, নিজের পছন্দে,
কেউ বাজায় বাঁশি, কেউ বাজায় ঢোল।
ওগো ভাগ্যে-পাওয়া বন্ধু মোর,
তেমনই তুমি-আমি, তেমনই
যা কিছু বলি, যা কিছু করি।
.
গাছের পাতা-ফুলের মত, এই জগতের জীব।
কিছুদিনের সুখের বাদে আসে দুঃখ, ক্লেশ।
দেখতে দেখতে তাই চ’লে যায়
ঘর-পরিবার-দেশ।
.
জীবনে, সংসারে, নেই কোনো স্থিতি।
তবুও এই যে মূল, এই যে পুলক-ব্যথা,
এই যে দয়া-টান-ভালোবাসা,
তারই থেকে বেঁচে থাকার কারণ,
তারই থেকে চেষ্টার, সংগ্রামের সাহস।
.
******
.
তোমার সাথে যদি হাসতে, কাঁদতে পারি,
ভাগ্যে যদি কিছু সহায়তা দিতে পারি,
সেই আশীষের সৌভাগ্যে ধন্য-সুখী
তোমার-আমার জন্ম-জীবন-মরণ—
ফুলের যেমন।
.
শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি.
পরিবর্তিত: বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর
বার্ক্লি, কালিফর্নিয়া
.
No comments:
Post a Comment