Thursday, November 8, 2018

Itihaxer Boi-ইতিহাসের বই



ইতিহাসের বই

ইতিহাসের বইয়ের পাতায় দেখি
রক্তমাখা আঙুলের ছাপ—
শুকিয়ে, রঙ বদলিয়ে, প্রায় কালো।

পাতা উল্টিয়ে দেখি—
কত কিছু প্রাচীন যুগের কাহিনী—
নবাব, রাজা, সুলতান, সম্রাট—
এনাদের কীর্তির মালা।

পড়তে পড়তে, পেলাম কত
রাজবংশের বিবাহের সম্বন্ধ,
ব্যবসা-বাণিজ্যর প্রগতির খবর—
আর তারই পাশে পাশে
সারি সারি দুর্ঘটনার তালিকা—

যুদ্ধ, মহাযুদ্ধ, দূর্ভিক্ষা, দাঙ্গা,
নিষ্ঠুর জুলুম, বিদ্রোহ, বিপ্লব,
প্রতিবিপ্লব, নির্দয় খুনাখুনি,
জয়, পরাজয়, লুটপাট, ধর্ষণ।

পাতায় পাতায়, শুনতে পেলাম
শাঁখ-ঢোলের ডাকাডাকি,
ঢাল-তলোয়ারের ঠং ঠং, কামানের গর্জন,
হাতির ডাক, ঘোড়ার দৌড়, সৈনিকের চিৎকার,
বিজয়ের জয়ধ্বনি।

শুনলাম দূরে, হাহাকার, আর্তনাদ—
যারা আহত, তাদের কাকুতি,
যারা পরাজিত, তাদের বিলাপ।

এসবের খবর পেলাম, তবে
খুঁজে পেলাম না কৃষকের, শ্রমিকের নাম,
বিধবার দুর্দশা, অনাথের ভীতি,
মা-বাপের দৈনিক পরিশ্রম।

খুঁজে পেলাম না, ছোটদের হাসিকান্না, খেলা,
মিস্ত্রির কেরামতি, কারিগরের কৌশল।

দেখতে পেলাম না, মা-বাবার মুখে—
সুখের খোলা হাসি, দুঃখের চোখের জল।

শুনতে পেলাম না কোথাও
ধর্ষিত মেয়ের গোঁঙানি—
প্রতি কালের চিরঞ্জীবী গান।

শুনতে পেলাম না
রাখালের বাঁশি, বাউলের গীত,
বনের ধারে সাঁওতালের নাচ গান।

ভাবলাম, কোথায় গেল, হায়,
গাঁয়ের গরুর ডাক,
পাখিদের ভোরের আহ্বান?

তাও সন্তুষ্ট হলাম শেষে।
পড়ে, রেখে দিলাম আলমারিতে,
সেই পুরনো  ইতিহাসের বইটাকে।

বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ খ্রি 
ব্রুক্লিন, নিউ ইয়র্ক
-------------------------------------------

I would like to thank my uncle, Prokas Das, for several corrections.  I am responsible for any remaining errors or sillinesses in the Bengali. 
--Arjun 

No comments: